Posts

Showing posts from July, 2020

কুরবানী: পর্ব-০২ || এইচ. এম নূর আলম ফয়সাল

Image
কুরবানী: পর্ব-০২  [পশু যবাইয়ের সময়, নিয়ম, গোশত বন্টন ও গোশত জমা রাখার বিধান, কুরবানীর সাথে আকীকা]  [ ] যবাইয়ের সময়:  কুরবানির পশু যবাইয়ের শর্ত হলো, ১০ ই জিলহজ তথা ঈদের দিন সূর্য উদয়ের পর ঈদের সালাত আদায় করে উপযুক্ত স্থানে পশু যবাই করবে। ঈদের সালাতের পূর্বে কুরবানির নিয়তে পশু যবাই বৈধ নয়। একইসাথে পরবর্তী তিনদিন (আইয়ামে তাশরীক) যেকোন সময়ে কুরবানির নিয়তে পশু যবাই করা যাবে। যারা শুধুমাত্র একটি পশু কুরবানি করবে তাদের জন্য ঈদের দিন যবাই করা উত্তম। তবে কেউ যদি ১১,১২ বা ১৩ তারিখেও যবাই করে তার কুরবানি শুদ্ধ হবে।  রাসূল (স) বলেন, ঈদের (আযহা) দিন আমাদের প্রথম কাজ হলো নামাজ পড়া, তারপর বাড়িতে ফিরে যাওয়া এবং কুরবানি করা। যে ব্যক্তি এরুপ করবে সে আমাদের সুন্নত মেনে চলবে। আর যে ব্যক্তি এর আগে যবাই করবে, সে তার পরিবারের জন্য কিছু গোশতের ব্যবস্থা করতে পারবে বটে, তবে তার কুরবানি হবে না। (ফিকহুস সুন্নাহ)  [ ] যবাইয়ের নিয়ম:  ★ যবাই করতে সক্ষম এবং যবাইয়ের কাজে পারদর্শী এমন প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের কুরবানির পশু নিজেই যবাই করবে। আর নিজের পশু নিজে কুরবানি করা সুন্নত। যবাইয়ের সময় বলবে...

আকীদা (ঈমান): পর্ব-০৪|| এইচ.এম নূর আলম ফয়সাল

Image
আকীদা (ঈমান): পর্ব-০৪  (তাওহীদ)   তাওহীদ শব্দটি 'ওয়াহদা' (وحد) ক্রিয়ামূল থেকে উৎপত্তি হয়েছে৷ এর অর্থ হলো- কোন জিনিসকে একক হিসেবে নির্ধারন করা। অর্থাৎ একককৃত বস্তু ব্যতিত অন্য বস্তু হতে যেকোন বিধানকে অস্বীকার করে একককৃত বস্তুর জন্য তা সাব্যস্ত করা। যেমন আমরা বলি, 'আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোন মা'বূদ নেই'। যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য প্রদান করবে, সে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য সকল বস্তু হতে ইবাদাতকে (উলুহিয়্যাত) অস্বীকার করে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য তা নির্ধারন করবে। তাওহীদ বলতে , 'লা -ইলাহা ইল্লাহ' বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই, এটাই হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে। আবার কিছু বর্ণনায় এরসাথে وحده لا شريك له অর্থাৎ তিনি একক, তার কোন শরীক নেই ইত্যাদি সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তাওহীদের ব্যাখ্যায় এটাই যথোপযুক্ত যে- ইবাদাত, উপাসনা, আরাধনা ইত্যাদির মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য ইবাদাত করা যাবে না। মুশরিকরা আল্লাহকে উপাস্যকারী হিসেবে মানে কিন্তু তারা তার সাথে শরীক করে। তারা ইবাদাতের ক্ষেত্রে একমাত্র উপাস্যকারী হিসেবে আল্লাহকে মানে না, তার সাথে সহযোগী বা...

কুরবানী: পর্ব-০১ || এইচ.এম নূর আলম ফয়সাল

Image
কুরবানী: পর্ব-০১ [উৎপত্তি, বিধান, লক্ষ্য উদ্দেশ্য, ফযীলত, পশুর বিবরণ, শরীক]  [ ] কুরাবানীর উৎপত্তিঃ  ★আমরা জানি যে পৃথিবীর প্রথম কুরবানি হলো হাবিল ও কাবিলের কুরবানি। আদম (আ) এর সন্তান হাবিল কাবিল ছিলো দুই ভাই। কাবিল বড় হাবিল ছোট।  ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, আদম (আ) সন্তানদের মধ্যে এক গর্ভের পুত্র সন্তানের সাথে অন্য গর্ভের কন্যা সন্তানের বিবাহ দিতেন ( সে সময় মা হাওয়ার প্রত্যেক গর্ভপাতে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে জন্ম নিতো) । সে মতে হাবিল কাবিলের যমজ বোনকে বিবাহের জন্য মনস্থির করে। কিন্তু কাবিল এটা মানতে পারেনি। তার বোন ছিলো সুন্দরী ও রুপবতী।  তাই কাবিল নিজেই বোনকে বিয়ে করতে চাইলো এবং আদম (আ) এর আদেশও অমান্য করলো। তারপর আদম (আ) তাদের উভয়কে কুরবানি করতে বলে তিনি হজ্জের জন্য মক্কায় চলে যান।  আদম (আ) চলে গেলে তারা কুরবানি করে। তখন নিয়ম ছিল, কোরবানির বস্তু একটি খোলা প্রান্তরে রেখে আসতে হবে। আকাশ থেকে আগুন এসে যদি তা জ্বালিয়ে দেয় বুঝতে হবে কোরবানি কবুল হয়েছে। আর যদি কোরবানির সামগ্রী অক্ষত থাকে, তার মানে এ কোরবানি আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়নি। পেশায় হাবিল ছিলেন রাখাল। তিনি তার দুম্...

আকীদা (ঈমান): পর্ব- ০৩|| এইচ.এম নূর আলম ফয়সাল

Image
আকীদা (ঈমান): পর্ব- ০৩  (আরকানুল ঈমান)  আমরা ইতপূর্বে জেনেছি যে, অন্তরে বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকারোক্তি এবং কর্মে বাস্তবায়ন করাকে ঈমান বলে। তবে ইমাম আবু হানীফার দৃষ্টিতে - অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাসের নাম ঈমান। মৌখিক স্বীকারোক্তি ও কর্ম ঈমানের পরিপূরক।  বাস্তবিক অর্থে কাজ ছাড়া ঈমানের পরিচয় ফলপ্রসূ নয়, আবার অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাস ছাড়া ঈমানদার হওয়া যায় না। অতএব আকীদার প্রথম দাবীই হলো অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস। অতঃপর বিশ্বাসের দৃঢ়তার বাস্তব প্রমান হলো মানুষ আকীদা হিসেবে যা বিশ্বাস করবে তা কাজে বাস্তবায়ন করবে।  ইসলামী আকীদা বিশ্বাস কি হবে বা একজন মানুষকে ঈমানদার হওয়ার জন্য কোন কোন বিষয়ে বিশ্বাস করতে হবে তা কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে। পরিভাষায় এগুলোকে 'আরকানুল ঈমান' বা ঈমানের ভিত্তি বলা হয়।  আল্লাহ তায়ালা বলেন -   يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اٰمِنُوۡا بِاللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖ وَالۡكِتٰبِ الَّذِىۡ نَزَّلَ عَلٰى رَسُوۡلِهٖ وَالۡكِتٰبِ الَّذِىۡۤ اَنۡزَلَ مِنۡ قَبۡلُ‌ؕ وَمَنۡ يَّكۡفُرۡ بِاللّٰهِ وَمَلٰٓٮِٕكَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلا...

কুরআন সুন্নাহর আলোকে মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ে সমাধানের উপায় ও আমাদের করণীয় || এইচ.এম নূর আলম ফয়সাল

Image
বিষয়ঃ কুরআন সুন্নাহর আলোকে মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ে সমাধানের উপায় ও আমাদের করণীয়।  কুরআন হাদীসে স্পষ্ট ও অস্পষ্টভাবে উল্লেখিত ইসলামের বিভিন্ন বিধান নিয়ে বিতর্ক ও মতবিরোধ সাহাবীদের যুগ থেকেই চলমান। এমনকি রাসূল (স) এর জীবদ্দশাতেও এমন ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। এর কারন হলো জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা অর্থাৎ কোন ব্যক্তির পক্ষেই ইলম বা জ্ঞানের সকল অধ্যায় ও স্তরের একচ্ছত্র অধিকারী হওয়া সম্ভব নয়। সে যা জানে তার বাহিরেও একই বিষয় সম্পর্কিত অথবা বিপরীত ইলম থাকতে পারে। রাসূল (স) এর জীবদ্দশায় কোন মতবিরোধ দেখা গেলে তা রাসূল (স) এর সামনে উপস্থাপন করা হলে উনি সমাধান করে দিতেন। অনেক ক্ষেত্রে বিরোধে লিপ্ত হওয়া দু'জনই সঠিক হিসেবে বিবেচিত হতেন। এবং সমাধানের পর দু'জনই তা মেনে নিতেন। কিন্তু গত কয়েক শতাব্দী থেকে অন্ধ ও গোড়ামী অনুসরণের কারনে মতবিরোধ বিবাদে রুপ নিয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীরাও নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ ও বিবাদে লিপ্ত। যার মধ্যে প্রধানত মাযহাব ও আহলে হাদীস কেন্দ্রীক জটিলতায় বর্তমান অধিকাংশ গ্রুপ একচ্ছত্রভাবে নিজেদের মতকে সঠিক এবং অন্যদের মতকে ভূল প্রমান করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। যা সম্পূর্ণ কুরআ...

আকীদা (ঈমান) : পর্ব- ০২ || এইচ.এম নূর আলম ফয়সাল

Image
আকীদা (ঈমান) : পর্ব- ০২  আমরা প্রথম পর্বের আলোচনা থেকে মোটামুটি বুঝতে পেরেছি যে, আমল বা ইবাদাত হিসেবে যা কিছুই করি না কেন তা কবুল ও ফলপ্রসূ হওয়ার শর্ত হলো আকীদার পরিশুদ্ধতা। অতএব আকীদা সম্পর্কে জানা ও বুঝার অপরিসীম গুরুত্ব এর মাধ্যমেই উপলব্দি করা যায়।  আকীদা সম্পর্কে অধ্যয়ন, আলোচনা ও নসীহতের মাধ্যমে ঈমানের সঠিক কাঠামো ও তার স্বরুপ সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। ঈমান বিনষ্টকারী কারন সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়, ভ্রান্ত ও বাতিল আকীদা বা বিশ্বাস সম্পর্কে সচেতনতা লাভ করা যায়।  সুতরাং ইবাদাত ও আমলকে আল্লাহর দরবারে কবুল করতে হলে অবশ্যই শিরক, কুফরী মুক্ত সাচ্ছা ঈমান বা আকীদার অনুসারী হতে হবে। ★দুনিয়া ও আখেরাতে উত্তম জীবন লাভের একমাত্র নিয়ামক হলো ঈমান বা আকীদার সহীহ বিশ্বাস। আল্লাহ তায়ালা বলেন-  وَلَوۡ اَنَّ اَهۡلَ الۡقُرٰٓى اٰمَنُوۡا وَاتَّقَوۡا لَفَتَحۡنَا عَلَيۡهِمۡ بَرَكٰتٍ مِّنَ السَّمَآءِ وَالۡاَرۡضِ وَلٰكِنۡ كَذَّبُوۡا فَاَخَذۡنٰهُمۡ بِمَا كَانُوۡا يَكۡسِبُوۡنَ‏ যদি জনপদের লোকেরা ঈমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতো, তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর রবকতসমূহের দুয়ার খ...