দ্বীন নিয়ে দলাদলি ও মতবিরোধ থেকে বিরত থাকা ইসলামের অন্যতম মূলনীতি | এইচ.এম নূর আলম ফয়সাল




বিষয়ঃ দ্বীন নিয়ে দলাদলি ও মতবিরোধ থেকে বিরত থাকা ইসলামের অন্যতম মূলনীতিঃ


আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে দলাদলি না করে সম্মিলিতভাবে ইসলামের পথে থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেন-
وَاعۡتَصِمُوۡا بِحَبۡلِ اللّٰهِ جَمِيۡعًا وَّلَا تَفَرَّقُوۡا‌

" তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারন করো এবং দলে দলে বিভক্ত হয়োনা।" (আলে ইমরান-১০৩)

এজন্যই সম্মিলিতভাবে ইসলামের পথে থাকতে হবে, কারন মুসলিম সম্প্রদায় একটিমাত্র উম্মাহ। তাদের রব একজন। তাদের কিতাব একটি। তাদের শরীয়াহও একটি। এবং তাদের জন্য প্রেরিত পথপ্রদর্শকও ( রাসূল স.) একজন। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَاِنَّ هٰذِهٖۤ اُمَّتُكُمۡ اُمَّةً وَّاحِدَةً وَّاَنَا۟ رَبُّكُمۡ فَاتَّقُوۡنِ

"আর তোমাদের এ উম্মত হচ্ছে একই উম্মত এবং আমি তোমাদের রব, কাজেই আমাকেই তোমরা ভয় করো।" (মুমিনুন-৫২)

দ্বীন প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান নিয়ামক হলো উম্মাহকে এক থাকা তথা বিচ্ছিন্ন না হওয়া। এব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা সকল নবী রাসূলকে একই নির্দেশনা দিয়েছন। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحٗا وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ وَمَا وَصَّيۡنَا بِهِۦٓ إِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓۖ أَنۡ أَقِيمُواْ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُواْ فِيهِۚ كَبُرَ عَلَى ٱلۡمُشۡرِكِينَ مَا تَدۡعُوهُمۡ إِلَيۡهِ

“তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নূহকে- আর যা আমি ওহী করেছি আপনাকে- এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা এবং ঈসাকে, এ বলে যে, তোমরা দীন প্রতিষ্ঠা কর এবং তাতে দলাদলি-বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করো না। আপনি মুশরিকদের যার প্রতি আহ্বান করছেন তা তাদের নিকট দুর্বহ মনে হয়।” (সূরা আশ-শুরা- ১৩)

পরস্পর তর্ক বির্তক এবং বিচ্ছিন্ন মনোভাব দ্বীন কায়েমের পথে অন্তরায়। আল্লাহ বলেন-
وَاَطِيۡعُوۡا اللّٰهَ وَرَسُوۡلَهٗ وَلَا تَنَازَعُوۡا فَتَفۡشَلُوۡا وَتَذۡهَبَ رِيۡحُكُمۡ‌ 

"আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো। পরস্পর বিবাদে লিপ্ত হয়োনা, তাহলে তোমরা ব্যর্থ হয়ে যাবে এবং তোমাদের উদ্যম ও প্রভাব নষ্ট হয়ে যাবে।" (আনফাল-৪৬)

যারা দ্বীনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিবাদ ও বিচ্ছিন্নতা তৈরি করে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা হুশিয়ারি করে বলেন-
اِنَّ الَّذِيۡنَ فَرَّقُوۡا دِيۡنَهُمۡ وَكَانُوۡا شِيَعًا لَّسۡتَ مِنۡهُمۡ فِىۡ شَىۡءٍ‌ؕ اِنَّمَاۤ اَمۡرُهُمۡ اِلَى اللّٰهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمۡ بِمَا كَانُوۡا يَفۡعَلُوۡنَ

"যারা নিজেদের দ্বীনকে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে নিঃসন্দেহে তাদের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারটি আল্লাহর ওপর ন্যস্ত রয়েছে। তারা কি করেছে, সে কথা তিনিই তাদেরকে জানাবেন।" (আনয়াম- ১৫৯)

আল্লাহ আরো বলেন-
 وَلَا تَكُوۡنُوۡا كَالَّذِيۡنَ تَفَرَّقُوۡا وَاخۡتَلَفُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَهُمُ الۡبَيِّنٰتُ‌ؕ وَاُولٰٓٮِٕكَ لَهُمۡ عَذَابٌ عَظِيۡمٌۙ

"তোমরা যেন তাদের মতো হয়ে যেয়ো না, যারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে এবং সুস্পষ্ট ও প্রকাশ্য হিদায়াত পাওয়ার পরও মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে। যারা এ নীতি অবলম্বন করেছে তারা সেদিন কঠিন শাস্তি পাবে।" (ইমরান-১০৫)

অতএব বিভিন্ন মাসয়ালা ও মতামত কে কেন্দ্র করে যারা উম্মাহর মধ্যে দলাদলি ও বিবেধ সৃষ্টি করতেছে এবং যারা তাদের অনুসরণ করতেছে তারা উভইয়ে উম্মাহর ক্ষতি সাধনে লিপ্ত। আমাদের উচিৎ এমন ব্যক্তিদের নিকট থেকে নিজেদের দূূূূরে রাখা।
আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।

এইচ.এম নূর আলম ফয়সাল
নোয়াখালী
৩০.০৪.২০২০ ইং 

Comments

পপুলার পোস্ট

দারসুল কুরআন| রবের শ্রেষ্ঠত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের আহ্বানে করনীয় | সূরা মুদ্দাসসির (১-৭)

দারসুল কুরআনঃ ইসলামী আন্দোলন ও বাইয়াতের গুরুত্ব | এইচ.এম নুর আলম ফয়সাল|আলোর মশাল ব্লগ

দারসুল হাদীস : পাচটি বিষয়ের নির্দেশ