আল্লাহর প্রিয় হতে করণীয়|এইচ.এম নুর আলম ফয়সাল
আল্লাহর প্রিয় হতে করণীয়ঃ
দুনিয়ায় কোন মানুষের প্রিয় হওয়াটা খুবই কঠিন। মানুষ একে অন্যের প্রিয় হওয়ার জন্য কতকিছুই না করে থাকে। সময়, শ্রম, অর্থ ইত্যাদি ঢেলেও অনেকক্ষেত্রে মানুষের প্রিয় হওয়া যায় না। মানুষ ব্যর্থ হওয়ার পরে আবারো ছুটে চলে কারো না কারো প্রিয় হওয়ার পেছনে। কেউ বসের, কেউ স্ত্রী, কেউ নেতা, কেউ জনগনের প্রিয় হতে কতইনা মরিয়া। কিন্তু আমরা একবারো ভেবে দেখিনা যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, তার প্রিয় হতে পেরেছি কিনা। আল্লাহ তায়ালার প্রিয় হওয়া খুবই সহজ। প্রয়োজন হয় না কোন মাধ্যমের, ঘুষের নেই কোন আদান-প্রদান। শুধুমাত্র গতিশীল জীবনে চলতে ফিরতে কিছু কাজ করলেই আল্লাহ প্রিয় হওয়া যায়। এর জন্য আলাদাভাবে সময়ের প্রয়োজন হয়না, অনেক টাকা পয়সারও প্রয়োজন নেই। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা কাদেরকে ভালোবাসেন অথবা কোন বান্দারা তার প্রিয় তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।কুরআনের আলোকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে করণীয় নিম্মে উল্লেখ করা হলো-
১. আল্লাহর ওপর ভরসা করুনঃ
মুমিন জীবন মানেই আল্লাহ নির্ভর। সুখ-দুঃখ, ভালো-মন্দ সবকিছুতেই মুমিন আল্লাহর ওপর ভরসা করে। মুমিন বিপদ-আপদ, রোগ-বালাই সর্বাবস্থায় নিজস্ব চেষ্টার পরে ফলাফলের জন্য আল্লাহর মুখাপেক্ষী হয়। এভাবেই আল্লাহর ওপর নির্ভরতায় মুমিন হয়ে যায় আল্লাহর প্রিয় বান্দা।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الۡمُتَوَكِّلِيۡنَ
অর্থ:"আল্লাহ তাদেরকে পছন্দ করেন যারা তাঁর ওপর ভরসা করে কাজ করে"। (ইমরান-১৫৯)
وَتَوَكَّلۡ عَلَى اللّٰهِؕ وَكَفٰى بِاللّٰهِ وَكِيۡلاً
"আল্লাহর প্রতি নির্ভর করো। কর্ম সম্পাদনের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট"। (আহযাব-৩)
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন- (ইব্রাহিম-১২), (ইউসুফ-৬৭) ( যুমার-৩৮),(তালাক-৩)
২. রাসূল (স) কে অনুসরণ করুনঃ
রাসূল (স) এর অনুসরণ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি আল্লাহর প্রিয় হতে পারবে না। কেননা রাসূল (স) এর অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রকৃত অনুসরণ। কারন আল্লাহ তায়ালা তার সকল আদেশ নিষেধ রাসূল (স) এর মাধ্যমেই বান্দার কাছে পৌছিয়েছেন। তাই কেউ যদি রাসূল (স) এর পূর্ণ অনুসরণ না করে তাহলে সে আল্লাহর প্রিয় হওয়ার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ
غَفُورٌ رَّحِيمٌ
বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী, দয়ালু। (ইমরান-৩১)
قُلْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَالرَّسُولَ فإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنَّ اللّهَ لاَ يُحِبُّ الْكَافِرِينَ
বলুন, আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য প্রকাশ কর। বস্তুতঃ যদি তারা বিমুখতা অবলম্বন করে, তাহলে আল্লাহ কাফেরদিগকে ভালবাসেন না। (ইমরান-৩২)
৩. তাকওয়া অর্জন করুনঃ
তাকওয়া অর্থ আল্লহভীতি। সবচেয়ে সরল ও সহজ অর্থ হলো সর্বদা আল্লাহর স্মরন অন্তরে জাগ্রত রাখা। এতে করে একদিকে যেমন আল্লাহর প্রিয় হওয়া যায়, আবার সকল প্রকার খারাপ কাজ থেকে সহজেই দূরে থাকা যায়। তাই মুমিন জীবন তাকওয়াপূর্ণ হওয়া উচিৎ। কেননা পরহেজগারি অর্জনের প্রধান মাধ্যমই হচ্ছে তাকওয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
اِنَّ اَكۡرَمَكُمۡ عِنۡدَ اللّٰهِ اَتۡقٰٮكُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِيۡمٌ خَبِيۡرٌ
"তোমাদের মধ্যে যে অধিক পরহেজগার (তাকওয়াবান) সে-ই প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদার অধিকারী। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও সবকিছু সম্পর্কে অবহিত"। (হুজুরাত-১৩)
اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الَّذِيۡنَ اتَّقَوا وَّالَّذِيۡنَ هُمۡ مُّحۡسِنُوۡنَ
আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং ইহসান অনুসারে আমল করে। (নাহল-১২৮)
তাকওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন- (ইমরান-১০২,২০০), (মায়েদা-২), (তাগাবুন-১৬), (নুর-৫২)
৪. বেশী বেশী তাওবা করুনঃ
তাওবা আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে দূরত্ব দূর করে। আপনি কোন ব্যক্তি থেকে যত দূরে থাকবেন আন্তরিকতা ভালোবাসা তত কমতে থাকবে। তদ্রুপ কোন বান্দা যদি আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাই তাহলে তার উচিৎ বেশী বেশী তাওবা করা। কেননা তাওবা বান্দাহকে কালিমা মুক্ত করে, আল্লাহর প্রিয় করে তোলে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيۡنَ وَيُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِيۡنَ
"আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তাওবা করে এবং পবিত্রতা অবলম্বন করে"। (বাকারা-২২২)
وَتُوۡبُوۡۤا اِلَى اللّٰهِ جَمِيۡعًا اَيُّهَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
"হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে"। (নুর-৩১)
অন্যান্য আয়াত; তাহরীম-৮, বাকারা-১৬০, তাওবা-১১২, নিসা-১৭
৫. পাক পবিত্র থাকুনঃ
পাক-পবিত্রতা আত্মিক ও শারিরীক প্রশান্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রকার রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা অন্যতম শর্ত। তাছাড়া পবিত্রতা ব্যতিত নামাজ শুদ্ধ হয় না। নামাজ হলো বেহেশতের চাবিকাঠি। আর পবিত্রতা হলো নামাজের চাবিকাঠি। (তিরমিজী)। এছাড়াও রাসূল (স) পবিত্রতাকে ঈমানের অংশ হিসেবে হাদীসে উল্লেখ করেছেন। সুতরাং পবিত্রতা মুমিন জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীক পছন্দ করেন। তিনি বলেন-
اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيۡنَ وَيُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِيۡنَ
"আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তাওবা করে এবং পবিত্রতা অবলম্বন করে"। (বাকারা-২২২)
৬. ইহসান তথা দয়া ও অনুগ্রহ করুনঃ
মানব জীবনে ইহসান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইহসান তথা দয়া অনুগ্রহ যদি কোন সমাজ থেকে উঠে যায় তাহলে সেটা আর মানুষ্য সভ্যতায় থাকে না। হয়ে যায় একটি বর্বর অসভ্য সমাজ। এজন্য আল্লাহ তায়ালা ইহসানের তাকীদ দিয়েছেন। এবং এসকল বান্দাহকে তার প্রিয় হিসেবেই সাব্যস্ত করেছেন। যেমম তিনি বলেন-
الَّذِيۡنَ يُنۡفِقُوۡنَ فِىۡ السَّرَّآءِ وَالضَّرَّآءِ وَالۡكٰظِمِيۡنَ الۡغَيۡظَ وَالۡعَافِيۡنَ عَنِ النَّاسِؕ وَاللّٰهُ يُحِبُّ الۡمُحۡسِنِيۡ
যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল সব অবস্থায়ই অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ দমন করে ও অন্যের দোষ–ত্রুটি মাফ করে দেয়। এ ধরনের সৎলোকদের আল্লাহ অত্যন্ত ভালোবাসেন। (ইমরান -১৩৪)
اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الَّذِيۡنَ اتَّقَوا وَّالَّذِيۡنَ هُمۡ مُّحۡسِنُوۡنَ
আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং ইহসান অনুসারে আমল করে। (নাহল-১২৮)
অন্যান্য আয়াত- (মায়েদা-৫৪), (আরাফ-৫৬)
৭. প্রিয় বস্তুটি দান করুনঃ
কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়, চিরাচরিত একটি বাক্য। পরিশ্রমের বিনিময়েই কিন্তু ভালো কিছু পাওয়া যায়। আবার মাঝেমাঝে অপেক্ষাকৃত কম ভালোর বিনিময়ে বেশী ভালো কিছুও পাওয়া যেতে পারে। তাই আল্লাহর প্রিয় যদি হতে হয় তাহলে মাঝেমাঝে নিজের কিছু প্রিয় জিনিস আল্লাহর জন্য কুরবান করতে হবে। যেমন ইব্রাহিম (আ) নিজের সন্তানকে কুরবান করতে প্রস্তুত হয়েছিলেন! তেমনি আমাদের জীবদ্দশায় ইসলামের প্রয়োজন কিন্তু আমার প্রিয় এমন বস্তু আল্লাহর প্রিয় হওয়ার নিমিত্তে নিঃসংকোচে ছেড়ে দেবো। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
لَنۡ تَنَالُوۡا الۡبِرَّ حَتّٰى تُنۡفِقُوۡا مِمَّا تُحِبُّوۡن ؕ وَمَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ شَىۡءٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِهٖ عَلِيۡمٌ
"তোমরা আল্লাহর প্রিয় হতে পারবে না (নেকী অর্জন করতে পারো না) যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় বস্তুগুলো (আল্লাহ্র পথে) ব্যয় করো। আর তোমরা যা ব্যয় করবে আল্লাহ তা থেকে বেখবর থাকবেন না।(ইমরান-৯২)
৮. সুবিচার করুনঃ
পরিবার, সমাজ, রাস্ট্র সকল স্তরে যারা ন্যায়বিচার ও সুবিচার স্থাপন করবে তারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
سَمّٰعُوۡنَ لِلۡكَذِبِ اَكّٰلُوۡنَ لِلسُّحۡتِؕ فَاِنۡ جَآءُوۡكَ فَاحۡكُمۡ بَيۡنَهُمۡ اَوۡ اَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡۚ وَاِنۡ تُعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ فَلَنۡ يَّضُرُّوۡكَ شَيۡـًٔاؕ وَّاِنۡ حَكَمۡتَ فَاحۡكُمۡ بَيۡنَهُمۡ بِالۡقِسۡطِؕ اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الۡمُقۡسِطِيۡنَ
"এরা মিথ্যা শ্রবণকারী ও হারাম আহারকারী। কাজেই এরা যদি তোমাদের কাছে (নিজেদের মামলা নিয়ে) আসে তাহলে তোমরা চাইলে তাদের মীমাংসা করে দিতে অথবা অস্বীকার করে দিতে পারো। অস্বীকার করে দিলে এরা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর মীমাংসা করে দিলে যথার্থ ইনসাফ সহকারে মীমাংসা করো। কারণ আল্লাহ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন।(মায়িদা-৪২)
"ঈমানদারদের মধ্যকার দু’টি দল যদি পরস্পর লড়াইয়ে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। তারপরও যদি দু’টি দলের কোন একটি অপরটির বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করে তবে যে দল বাড়াবাড়ি করে তার বিরুদ্ধে লড়াই করো। যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে।এরপর যদি তারা ফিরে আসে তাহলে তাদের মাঝে ন্যায় বিচারের সাথে মীমাংসা করিয়ে দাও এবং ইনসাফ করো। আল্লাহ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন। (হুজুরাত-৯)
এছাড়াও রাসূল (স) বলেন, ন্যায়বিচারক শাসক বিচার দিবসে আল্লাহর আরশের ছায়ায় স্থান পাবনে।
৯. সবর করুনঃ
সবর মুমিন জীবনের অন্যতম একটি গুন। সবরের মাধ্যমেই বান্দাহ নিজেকে তার রবের প্রিয় করে নিতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
فَمَا وَهَنُوۡا لِمَاۤ اَصَابَهُمۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَمَا ضَعُفُوۡا وَمَا اسۡتَكَانُوۡاؕ وَاللّٰهُ يُحِبُّ الصّٰبِرِيۡنَ
আল্লাহর পথে তাদের ওপর যেসব বিপদ এসেছে তাতে তারা মনমরা ও হতাশ হয়নি, তারা দুর্বলতা দেখায়নি এবং তারা বাতিলের সামনে মাথা নত করে দেয়নি। এ ধরনের সবরকারীদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন। (ইমরান-১৪৬)
বিপদ-আপদ আল্লাহর পক্ষে থেকে পরিক্ষা স্বরুপ। তাই এসময়ে যারা সবর করতে পারবে তারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারবে। একই সাথে আল্লাহর পক্ষে থেকে উত্তম প্রতিদানও পাবেন। যেমন আল্লাহ বলেন-
اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِيۡنَ
আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন। (বাকারা-১৫৩)
وَلَنَبۡلُوَنَّكُمۡ بِشَىۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَالۡجُوۡعِ وَنَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوٰلِ وَالۡاَنۡفُسِ وَالثَّمَرٰتِؕ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيۡنَۙ
আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো। এ অবস্থায় যারা সবর করে। (বাকারা-১৫৫)
রাসূল (স) বলেন- মানসিক বা শারিরীক কষ্টে যদি কোন ব্যক্তি সবর অবলম্বন করে তাহলে আল্লাহ প্রতিদান স্বরুপ তার সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন৷ এমনকি যদি সামান্য একটি কাটাও তার পায়ে বিধে তাও তার গুনাহ মাফের কারন হয়ে দাড়ায়। (মুত্তাফাকুম আলাইহি)
১০. মিতব্যয়ী হোনঃ
ইসলাম মানুষের জন্য একটি মধ্যমপন্থী জীবন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে৷ প্রয়োজনে ইসলাম খরচের যেমন স্বাধীনতা দিয়েছে একইভাবে অপ্রয়োজনে বেশী খরচ করা থেকে নিষেধ করেছেন। ইসলামের ঘোষনা হলো মিতব্যয়ী হওয়া। মিতব্যয়ী মানে কৃপনতা নয়। যখন যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ব্যয় করাই হচ্ছে মিতব্যয়ীতা।
এজন্য আল্লাহ তায়ালা অপচয় এবং কৃপনতা দু'টো থেকেই বান্দাহকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেন-
يٰبَنِىۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِيۡنَتَكُمۡ عِنۡدَ كُلِّ مَسۡجِدٍ وَّكُلُوۡا وَاشۡرَبُوۡا وَلَا تُسۡرِفُوۡاۚ اِنَّهٗ لَا يُحِبُّ الۡمُسۡرِفِيۡنَ-
হে বনী আদম! প্রত্যেক ইবাদাতের সময় তোমরা নিজ নিজ সুন্দর সাজে সজ্জিত হও। আর খাও ও পান করো কিন্তু সীমা অতিক্রম করে যেয়ো না, আল্লাহ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না। (আরাফ-৩১)
"আল্লাহ যাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং তারপরও তারা কার্পণ্য করে, তারা যেন এই কৃপণতাকে নিজেদের জন্য ভালো মনে না করে। না, এটা তাদের জন্য অত্যন্ত খারাপ। কৃপণতা করে তারা যা কিছু জমাচ্ছে তাই কিয়ামতের দিন তাদের গলার বেড়ি হবে। পৃথিবী ও আকাশের স্বত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। আর তোমরা যা কিছু করছো, আল্লাহ তা সবই জানেন"। (ইমরান-১৮০)
وَمَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ نَّفَقَةٍ اَوۡ نَذَرۡتُمۡ مِّنۡ نَّذۡرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ يَعۡلَمُهٗؕ وَمَا لِلظّٰلِمِيۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ
তোমরা যা কিছু ব্যয় করেছো এবং যা মানতও করেছো আল্লাহ তা সবই জানেন। আর জালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই। (বাকারা-২৭০)
রাসূল (স) বলেন, তিন ব্যক্তি আল্লাহর দুশমন ১. বৃদ্ধ ব্যভিচারী ২. কৃপন ৩. অহংকারী (মিশকাত)।
আল্লাহ আমাদেরকে আপনার প্রিয় বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।
এইচ.এম নুর আলম ফয়সাল
ব্লগার ও লেখক
Comments
Post a Comment