চোগলখোরী- দু'মুখো মানুষের পরিচয়ঃ

চোগলখোরী- দু'মুখো মানুষের পরিচয়ঃ

এই প্রকৃতির মানুষ সবচেয়ে নিকৃষ্ট। এরা সবার কাছে নিজেকে ভালো হিসেবে উপস্থাপন করে, তথা সবার কাছে নিজেকে তার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করে। মানুষকে তার ভূল ধরিয়ে না দিয়ে অন্য কেউ তার ব্যাপারে কি বলেছে এসব বাদানুবাদে চোগলখোর প্রকৃতির লোকগুলো ব্যস্ত থাকে।
চোগলখোরি সম্পর্কে উস্তাদ মওদুদী (র) বলেন-
গীবত যে আগুন জ্বালায় চোগলখোরী তাকে বিস্তৃত করে চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেয়। স্বার্থবাদীতার প্রেরণাই হয় এর মধ্যে আসল কার্যকর শক্তি। চোগলখোর ব্যক্তি কারুর কল্যাণকামী হতে পারে না। নিন্দিত দু’জনের কারুর কল্যাণ তার অভিপ্সীত হয় না। সে দুজনেরই বন্ধু সাজে কিন্তু অমঙ্গল চায়। তাই সে মনোযোগ দিয়ে দু’জনের কথা শুনে, কারুর প্রতিবাদ করে না। তারপর বন্ধুর নিকট এ খবর পৌঁছিয়ে দেয়। এভাবে যে আগুন এক জায়গায় লেগেছিল তাকে অন্য জায়গায় লাগাতেও সাহায্য করে। ইসলামী শরীয়ত এ কাজকে হারাম গণ্য করেছে। কারণ এর বিপর্যয়কারী ক্ষমতা গীবতের চাইতেও বেশী। কুরআনে চোগলখোরীকে মানুষের জঘণ্যতম দোষরুপে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ
لا يدخل الجنة نمَّامٌ –অর্থাৎ
“কোন চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (মুসলিম)
তিনি আরো বলেছেনঃ “তোমাদের সেই ব্যক্তি হচ্ছে সবচাইতে খারাপ যার দু’টি মুখ। সে এক দলের নিকট একটি মুখ নিয়ে আসে আর অন্য দলের নিকট আসে অন্য মুখটি নিয়ে।” এ ব্যাপারে যথার্থ ইসলামী পদ্ধতি হচ্ছে এই যে, কোথাও কারুর গীবত শুনলে সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবাদ করতে হবে অথবা উভয় পরে উপস্থিতিতে বিষয়টির অবতারণা করে এমনভাবে এর নিষ্পত্তি করতে হবে যাতে করে এক পক্ষ এমন কোন ধারণা করার সুযোগ না পায় যে, তার অনুপস্থিতিতে অন্য পক্ষ তার নিন্দা করেছিল। আর যদি ঐ ব্যক্তির মধ্যে বিদ্যমান কোন দোষের জন্যে গীবত করা হয়ে থাকে তাহলে একদিকে গীবতকারীকে তার গোনাহ্ সম্পর্কে সতর্ক করতে হবে এবং অন্যদিকে তার দোষ সংশোধনের পরামর্শ দিতে হবে।

এই প্রকৃতির মানুষরা সমাজ সংষ্কারে সবচেয়ে বড় বাধা। কেননা এদের কারনে মানুষের মধ্যকার বিবেদ সমাধান হয় না। এরা সবাইকে বলে আপনিই ঠিক, আপনার বিপরীত লোক বে- ঠিক। এভাবেই এরা চারিদিকে আগুন লাগিয়ে রাখে। তাই এদের থেকে সাবধান!!!!

এইচ.এম নুর আলম ফয়সাল 
লেখক ও ব্লগার

Comments

পপুলার পোস্ট

দারসুল কুরআন| রবের শ্রেষ্ঠত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের আহ্বানে করনীয় | সূরা মুদ্দাসসির (১-৭)

দারসুল কুরআনঃ ইসলামী আন্দোলন ও বাইয়াতের গুরুত্ব | এইচ.এম নুর আলম ফয়সাল|আলোর মশাল ব্লগ

দারসুল হাদীস : পাচটি বিষয়ের নির্দেশ