সাথী মানোন্নয়নে তিন মাসের প্যাকেজ ওয়ার্কিং


★ প্রিয় NDS এর সদস্য ও সাথী ভাইয়েরা আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ, আশাকরি নতুন বছরে নতুন উদ্যমে নতুন পরিকল্পনায় সাংগঠনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।

★NDS এর বিস্তৃতি তথা থানা, ওয়ার্ড ও উপশাখা অনুযায়ী সাথী মানের জনশক্তি খুবই কম। তাই শাখার সামগ্রিক গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য সাথী মানোন্নয়নে আপনাদের জন্য কিছু পরামর্শ দিচ্ছি। আশাকরি ভালো ফলাফল পাবেন।

★সংগঠনের সামগ্রিক কার্যক্রমের গতিশীলতা ধরে রাখার জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে সাথী বৃদ্ধি করা খুবই জরুরী। কেননা একটি জেলা শাখায় ওয়ার্ড ও উপশাখা পর্যায়ের মৌলিক কাজের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে একজন সাথী।।। তাই সাথী বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গতানুগতিক ধারা পরিহার করে বুদ্ধিভিত্তিক কর্মপ্রক্রিয়া গ্রহন করা উচিৎ।

👉প্রাইমারি প্রস্তুতি👈
[ ] ২ ক্যাটাগরিতে তালিকা প্রনয়ণ
• সেক্ষেত্রে ক্যাটাগরি-১ এ অপেক্ষাকৃত যারা রিপোর্ট গ্যাপ কম করে, তেমন নামাজ ক্বাজা করে না, পুরাতন কর্মী, এসএসসি পরিক্ষার্থী এদেরকে যুক্ত করবেন।
• ক্যাটাগরি-২ তে এইচএসসি পরিক্ষার্থী (তবে যারা এলাকায় থাকবে আপাতত তাদেরকে প্রাধান্য দিবেন), সংগঠনের জন্য প্রয়োজন বাট তেমন এক্টিভ নয়, প্রভাবশালী ইত্যাদি কর্মীদের যুক্ত করবেন।
• প্রতি ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ ৩০ জনকে তালিকাভুক্ত করবেন। বড় শাখাগুলো চাইলে তালিকায় সংখ্যা বাড়াতে পারেন, তবে সংখ্যা না বাড়িয়ে যথাযথ তালিকা প্রনয়ণ করে আপাতত কম সংখ্যক জনশক্তিকে তত্বাবধান করলে ফলাফল ভালো পাওয়া যাবে।
• তবে সকল ক্ষেত্রেই টার্গেটকৃত ছাত্রের গুনাবলী ও আদর্শ কর্মীর গুনাবলীর বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

[ ] ব্যক্তিগত রিপোর্ট ও সিলেবাসের বইঃ 
• প্রত্যেক থানা শাখা কম্পক্ষে ৮০-১০০ টি বা তারচেয়ে বেশি রিপোর্ট শাখায় দ্রুত স্টক করুন।
• নতুন সিলেবাসের আলোকে দুই সেট সাহিত্য, ৩ সেট কুরআন, ৫ সেট হাদীস স্টক ও রেজিঃ করুন। (শাখাগুলোতে কুরআন, সাহিত্যের তুলনায় হাদীস স্টক একেবারেই নঘন্য)
• ১০০ টি সাথী সিলেবাস স্টক করুন।

👉 ওয়ার্কিং প্রসেস 👈
[ ] থানা শাখার কাজঃ
• সভাপতি ও সেক্রেটারি বাদে বাকী সকল সম্পাদক ও সাথীদের মাঝে টার্গেট বন্টন করে দিবেন সেক্ষেত্রে ক্যাটাগরি-১,২ মেনশন করে দিবেন।
• তালিকা প্রনয়নের পর থানা শাখার উদ্যোগে সকল লিস্টেড কর্মীদের নিকট সিলেবাস দ্রুত পৌছাবেন।
• ক্যাটাগরি-১ এর কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের নামে একটা একটা সিলেবাস থানায় সংরক্ষণ এবং কয়েকদিন পরপর মুল্যায়ন করবেন।
• যাদের রিপোর্ট নেই তাদেরকে রিপোর্ট দেওয়া এবং সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে ভালোভাবে রিপোর্ট বুঝিয়ে দেওয়া।
• ১ম মাসে সম্ভব হলে সবাই অথবা ক্যাটা-১,২ আলাদাভাবে মিনিমাম ৫ ঘন্টার শিক্ষা বৈঠক করবেন। সেক্ষত্রে ইসলাম, নৈতিকতা ও সাংগঠনিক মৌলিক চেতনা রিলেটেড বিষয় ঠিক করবেন।
• শিক্ষা বৈঠকের আগে অথবা পরে যতদ্রুত সম্ভব লিস্টেড কর্মীদের সাথে গভীর যোগাযোগ করতে হবে সেক্ষেত্রে তাদেরকে প্রানবন্ত ও উৎসাহ প্রদান করাই হবে মূল বিষয়। সাংগঠনিক দশক সহ বিভিন্নভাবে হাই-হ্যালো বা গতানুগতিক যোগাযোগের উপর ডিপেন্ড না থেকে নতুন করে স্পেশালি যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনে জেলা দায়িত্বশীল বা সাবেক দায়িত্বশীল কিংবা মুরুব্বীদেরকে দিয়ে যোগাযোগ করিয়ে নিতে হবে। ব্যক্তিবিশেষ যে কর্মীকে যাকে দিয়ে যোগাযোগ করালে বেশি ভালো হবে তাকে দিয়ে যোগাযোগের ব্যবস্থা করাবেন।
• শিক্ষা বৈঠকের পরে একটা গ্যাপ নিয়ে প্রথম মাসের মাঝামাঝি ও শেষে (ভাগে ভাগে) দুইটা ওয়ার্কশপ করবেন, অফিসিয়াল প্রস্তুতি যতটুকু সম্ভব শেষ করার চেষ্টা করবেন, কিছু বাকী থাকলে সেটা বাড়িতে করিয়ে নিবেন।
• ২য় মাসে আরেকটা শিক্ষা বৈঠক করবেন। সেখানে আন্দোলন, শপথ, দায়ী বা দায়িত্বশীলের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা দিবেন।
• দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাসে গ্যাপে গ্যাপে প্রত্যেককে মিনিমাম ৩টি করে ওয়ার্কশপে এটেন্ড করাবেন। সেখানে পড়াশোনা করানো সহ মাসয়ালা-মাসায়েল এবং কর্মপদ্ধতি, সংবিধান ইত্যাদি বিষয়ের উপর গ্রুপ স্টাডির ব্যবস্থা রাখবেন।

[ ] থানা সভাপতি ও সেক্রেটারির কাজঃ
• কোন সম্পাদক বা সাথীর উপর মানোন্নয়নের কাজ ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
• সভাপতি/ সেক্রেটারি সরাসরি মানোন্নয়ন তত্বাবধান করবেন। সেক্ষেত্রে সেক্রেটারিকেই এই দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ। তবে যেখানে সেক্রেটারি পরিক্ষার্থী বা অন্য কোন কাজে নিয়মিত কিছু সময় ব্যস্থ থাকে সেখানে সভাপতিকে দায়িত্ব নিতে হবে।
• সভাপতি / সেক্রেটারি যার কাছে দায়িত্ব থাকবে তার কাছে ক্যাটাগরি-১ এর কর্মীদের সিলেবাস থাকবে। পাশাপাশি উপরে উল্লেখিত সিলেবাসের স্টক বইও তিনিই সংরক্ষণ করবেন।
• আপাতত ৩ মাস এটিই হবে ওনার প্রধান কাজ, প্রতি সপ্তহে মিনিমাম একবার এই ৩০ জনের রিপোর্ট দেখবেন, বই দিবেন এবং সিলেবাসের হিসেব সংরক্ষণ করবেন।
• দায়িত্ব যদি সেক্রেটারির কাছে থাকে তাহলে সভাপতি মাসে মিনিমাম দুইবার কর্মীদের রিপোর্ট দেখবেন ও সাইন করবেন।
• আপাতত ক্যাটাগরি-২ এর কর্মীদেরকে সম্পাদক বা সাথীদের দিয়ে বেশি তত্বাবধান করাবেন তবে সভাপতি সেক্রেটারি একেবারে গ্যাপ করা যাবে না। সেক্ষেত্রে সেক্রেটারি মিনিমাম মাসে দুইবার এবং সভাপতি মাসে ১ বার ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ এবং রিপোর্ট ও সিলেবাস মুল্যায়ন করবেন।
• থানা শাখার নিয়মিত সাথী, দায়িত্বশীল, চক্র, ক্লাস ইত্যাদি বৈঠকে এজেন্ডা রেখে মানোন্নয়নের বিষয়ে মুল্যায়ন অব্যাহত রাখবেন।
★★ বি.দ্রঃ থানা শাখা বা থানা সভাপতি/ সেক্রেটারি সকল কাজে একেক সময়ে একেক সাথী বা জোন দায়িত্বশীলদেরকে সাথে রাখবেন। বই বিতরন, সিলেবাস মূল্যায়ন, বা ব্যক্তিগত সাক্ষাতে অবশ্যই ঐ শাখার জোন সভাপতিকে সাথে রাখবেন। অথবা আপনারা কাজ দিয়ে এসে তা জোন সভাপতিকে দিয়ে বাস্তবায়ন করিয়ে নিবেন।

[ ] জোন দায়িত্বশীল বা সাথীদের কাজঃ 
• থানা শাখা থেকে দেওয়া টার্গেটেড কর্মীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।
• রিপোর্ট ও নামাজ ক্বাজা না করার বিষয়ে নিয়মিত তত্বাবধান করা।
• সিলেবাস অধ্যয়ন ও অন্যান্য প্রস্তুতিতে পূর্ণ হেল্প করা। সাহিত্য, নোট পত্র ইত্যাদি ব্যবস্থা করে দেওয়া।
• থানার পক্ষ থেকে নেওয়া কর্মসূচীতে টার্গেটেড ও নিজ শাখার লিস্টেড কর্মীদেরকে যথাযথভাবে অংশগ্রহণ করানো।
• জোন সভাপতি যদি নিজে সাথী না হয়ে থাকেন তাহলে প্রথমেই নিজের মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা, পাশাপাশি শাখার লিস্টেড কর্মীদের মানোন্নয়নে যথাযথ সহযোগিতা করা।

👉দূর্বলতা, অলসতায় আচ্ছন্ন না হয়ে এখন থেকেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে মানোন্নয়নের জন্য কাজ চালিয়ে যান, ইনশাআল্লাহ বছর শেষে ভালো একটি ফলাফল তৈরি হবে।

আল্লাহ আপনাদের কাজে বরকত দান করুক এবং গতিশীল কার্যক্রম পরিচালনায় আল্লাহ আপনাদের সহায় হোক এই কামনাই থাকলো।

 এইচ.এম নূর আলম ফয়সাল
১২.০২.২০২০

Comments

পপুলার পোস্ট

দারসুল কুরআন| রবের শ্রেষ্ঠত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের আহ্বানে করনীয় | সূরা মুদ্দাসসির (১-৭)

দারসুল কুরআনঃ ইসলামী আন্দোলন ও বাইয়াতের গুরুত্ব | এইচ.এম নুর আলম ফয়সাল|আলোর মশাল ব্লগ

দারসুল হাদীস : পাচটি বিষয়ের নির্দেশ