সূরা 'কাহফ' তেলোয়াতের ফজিলত বিশেষত জুমাবারে তেলোয়াতের ফজিলত।।।


সূরা 'কাহফ' মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ১৮ নং সূরা। এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সূরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এর আয়াত সংখ্যা ১১০। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, এ পুর্ণাঙ্গ সূরাটি এক সঙ্গে নাজিল হয়েছে এবং এর সঙ্গে ৭০ হাজার ফিরিস্তা দুনিয়াতে আগমন করেছেন।
-নামকরণ এ সূরায় আসহাবে কাহাফ তথা ওই সব মুমিন যুবক যারা দ্বীনকে সংরক্ষণের জন্য নিজেদের কোনো এক পাহাড়ের একটি গুহায় আত্মগোপনে রেখেছিলেন। তাদের ঘটনা বর্ণিত হওয়ায় এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরা কাহাফ।
মক্কার মুশরিকরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরীক্ষা নেবার জন্য আহলি কিতাবদের পরামর্শক্রমে তাঁর সামনে যে তিনটি প্রশ্ন করেছিল তার জবাবে এ সূরাটি নাযিল হয়।
এ সূরার তিনটি ঘটনা-
০১. ওই সব যুবকের ঘটনা, যারা ঈমান আকিদা রক্ষা করার জন্য নিজেদের ওপর কুরবানি করে নিজেদের আবাস ছেড়ে কোনো পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং সেখানে ৩০৯ বছর ঘুমিয়ে কাটানোর পর আল্লাহ তাআলা তাদের আবার জাগ্রত করেন।
০২. হজরত মূসা ও খিজির আলাইহিস সালামের মাঝে সংঘটিত ঘটনা।
০৩. বাদশাহ জুলকারনাইনের ঘটনা যিনি সারা বিশ্বের বাদশাহ ছিলেন এবং সারা পৃথিবী ভ্রমণ করেন। এ ঘটনাগুলোর জন্য উক্ত সূরাটি যেমন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ তেমনি অনেক ফজিলতপূর্ণ। ফজিলত- হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে সে দাজ্জালের ফিৎনা হতে নিরাপদ থাকবে। তাঁর থেকে আরেকটি রেওয়ায়েতে শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারে উল্লিখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমদ) সুতরাং প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত অথবা উভয় দিক দিয়ে মোট ২০ আয়াত যে মুখস্থ করবে সেও উল্লিখিত ফজিলতের অন্তর্ভুক্ত হবে।হজরত সাহাল ইবনে মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায়। আর যে পূর্ণ সূরা তিলাওয়াত করে তার জন্য জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমদ) জুমাআর দিন তিলাওয়াতের ফজিলত- হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত নূর হবে।হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফিৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে। অন্য রেওয়ায়েতে আছে এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে উল্লিখিত গুনাহ মাফ হওয়ার দ্বারা সগিরা গুনাহ উদ্দেশ্য। কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য যে, কবিরা গুনাহ তওবাহ করা ছাড়া মাফ হয় না।পরিশেষে...আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সূরা কাহাফ বেশি বেশি তিলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন এবং এর মর্মার্থ বুঝে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

এইচ.এম নুর আলম ফয়সাল
ব্লগার ও লেখক

সূরা কাহফ তেলোয়াতের ফযিলত

Comments

পপুলার পোস্ট

দারসুল কুরআন| রবের শ্রেষ্ঠত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের আহ্বানে করনীয় | সূরা মুদ্দাসসির (১-৭)

দারসুল কুরআনঃ ইসলামী আন্দোলন ও বাইয়াতের গুরুত্ব | এইচ.এম নুর আলম ফয়সাল|আলোর মশাল ব্লগ

দারসুল হাদীস : পাচটি বিষয়ের নির্দেশ