ফিরে দেখা: ২১ এপ্রিল-২০১৫ (১ম পর্ব)
(এইছ.এম নূর আলম ফয়সাল)
রাতের প্রথম প্রহর তথা ১.০০ টার কাছাকাছি সময় মঙ্গলবারের সমাপ্তি বুধবারের শুরু। সেজো চাচার পালিত কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করছে একই সময়ে দরজার চৌকাঠ থেকে ঠক ঠক আওয়াজ। ঘরে মা আর আমি যে যার রুমে ঘুমে বিভোর। হঠাত করে মা এসে শরীরে ঝাঁকুনি দিয়ে বলল কারা যেন আসছে। দরজায় ঠক ঠক করছে।
প্রথেমে বিরক্তিই ফীল করলাম, কেননা সকালে পরিক্ষা দিলাম, দুপুরে পাশের ইউনিয়ন এ বিয়েতে অংশগ্রহণ করলাম, বিকেলে খেলার মাঠে কোমলমতি শিশুদের ঘুড়ি উড়ানো আর কিশোরদের ঝগড়ায় ভরা ক্রিকেট খেলা উপভোগ করলাম। মাঠের একপাশে দূর্বা ঘাষে নিরবে শুয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ, দক্ষিন দিক থেকে আগত স্নিগ্ধ হাওয়া মনকে রাঙ্গিয়ে তুললো এমতাবস্থায় ফোন করলাম বর্তমান ইঞ্জিনিয়ার প্রিয় নাহিদকে। অনেক কথা হলো তার সাথে, শেষে বললাম দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকা আপনার দাওয়াতটি আগামি ২৩ তারিখ (২০১৫) পরিক্ষা দিয়ে খতম করার জন্য ফেনীতে তাশরীফ আনবো, কেননা এরপর ১০দিন ছুটি। প্রিয় বড় ভাই আব্দুস সালাম ফোন করল, বললাম ২৩ তারিখ পরিক্ষার পর বড় একটা বিরতি আছে তাই সুযোগ পাইলে দক্ষিন এলাকায় আসেন, ছোটফেনী নদীর তীরে অনেকদিন যাওয়া হয়না। উনিও সায় দিলেন। পরক্ষণে মসজিদের মিনার থেকে মুয়াজ্জিনের সুললিত কন্ঠে ভেসে আসলো আযানের সূর। আসর শেষ করে বাড়ীতে গেলাম কিচুক্ষন ফেসবুক জগতে ছিলাম একটা স্ট্যাটাস ও দিলাম। পরক্ষণে মাগরিবের আযান অত:পর নামাজ শেষ করে ঘরে এসে রুমে প্রবেশ করলাম, শরীরটা হটাত নিস্তেজ হয়ে গেলো অনেকদিনের সম্পর্কচ্ছেদ থাকা বিছানাটাও (আমার রুমের খাট ও বিছানা) কেমন চম্বুকের মতো টানতেছিলো, কি আর করা পরেরদিন পরিক্ষা না থাকায় তার ভালোবাসায় নিজেকে এলিয়ে দিলাম। কিচুক্ষন পর পাশের রুম থেকে মমতাময়ী মা'র আওয়াজ আসলো ফয়সাল উঠে নামাজ পড়ে খাওয়া শেষ করে তাড়াতাড়ি চলে যাও, শাকিল তোমার জন্য অপেক্ষা করছে ( প্রিয় শাকিল ১৭ সালের জানুয়ারিতে গত হয়েছে)। চোখ খুলে মোবাইলের সুইচে চাপ দিয়ে বুঝলাম ৮.০০ বাজে। প্রিয় বিছানাটা ছাড়তে চাইছেনা এরপরও উঠে এশার সালাত আদায় করে পূনরায় নিজেকে ছেড়ে দিলাম বিছানায়। রাতে মা এসে কি বলেছে জানিনা কারন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলাম কেননা শরীরটা অনেক বেশী দূর্বল লাগছিলো।
হটাত সম্বিত..................... মা'কে জিজ্ঞেস করলাম এতরাতে কে আসবে? উনি বললেন তোমার নাম ধরে ডাকতেছে। তখন বুঝলাম ভাই- ব্রাদাররা এসে গেছেন তাদের অনেকদিনের লালায়িত সরকারি মেহমানদারির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য। তাদের মেহমানদারি সুবিধা হয়না বিধায় দীর্ঘদিন তাদের থেকে একটু দূরে থাকার চেষ্টা করতাম। অবশেষে ধরা খেলাম! এইবার মেহমানদারি গ্রহন না করে উপায় নেই। যাইহোক একটু লুকোচুরি খেললাম কিন্তু কোন লাভ হলোনা।
বাড়ির উঠোনে তাকিয়ে দেখলাম চাচা-চাচী, ছোট ভাই-বোন গুলো দাড়িয়ে আছে। সাথে পাশের বাড়ির কিছু পরিচিত মানুষদের ও দেখা যাচ্ছে। বাড়ির প্রবেশ মুখে অনেকে এসে হাজির, সবার কথা একটায় এতরাতে কি? আপনারা দিনের বেলা আসিয়েন............।
কোন কিছুই হলোনা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রটোকল নিয়ে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে রওনা করলাম উপজেলা হেডকোয়াটারের দিকে। যেখানে রাষ্ট্রীয় খাস কামরায় চলমান রাতের বাকী অংশ কাটিয়ে সকালে (২১তারিখ) সরকার বাহাদুরের জেলার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে মোলাকাত করে বিকেলের মধ্যে চুড়ান্ত মেহমানখানায় পৌছতে হবে............।
★অসমাপ্ত★
বি. দ্র: বাকী অংশ কিছু দিনের মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করব।
Comments
Post a Comment